শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩
জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় : আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম হয় ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুয়ারি (বাংলা ২৪ পৌষ, ১৩১৫) শুক্রবার সকালে উত্তর কলকাতায় মাতুলালয়ে। পিতার নাম হরেন্দ্র নাথ গুপ্ত এবং মাতা সরলাসুন্দরী দেবী ।
হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত ছিলেন কমর্শিয়াল আর্টিস্ট ; সেযুগের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকাগুলিতে ছবিও আঁকতেন। তার রাজভক্তি ও রক্ষণশীলতার বিপরীতে অবস্থান করতেন মা সরলাসুন্দরী দেবী। সাহিত্যপাঠই ছিল তার জীবনের একমাত্র ‘পরমার্থ’। রাজনৈতিক আদর্শে ছিলেন কট্টর ব্রিটিশ-বিদ্বেষী স্বদেশী।
গুপ্ত-পরিবারের আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলার বেগমপুরে। যদিও আশাপূর্ণা দেবীর জীবনের সঙ্গে এই অঞ্চলটির কোনও প্রত্যক্ষ যোগ ছিল না। তার ছোটোবেলা কেটেছে উত্তর কলকাতাতেই, ঠাকুরমা নিস্তারিনী দেবীর পাঁচ পুত্রের একান্নবর্তী সংসারে। পরে হরেন্দ্রনাথ যখন তার আপার সার্কুলার রোডের (বর্তমান আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রোড) নিজস্ব বাসভবনে উঠে আসেন আশাপূর্ণার বয়স তখন সাড়ে পাঁচ বছর।
কিন্তু বাল্যের ওই কয়েকটি বছর তার মনে গভীর ছাপ রেখে যায়। পরবর্তীকালে সাহিত্যেও নানা ভাবে এঁকেছিলেন ‘দেহে ও মনে অসম্ভব শক্তিমতী’ তার সেই ঠাকুরমার ছবি।
শৈশব ও শিক্ষা : প্রথাগত শিক্ষার সৌভাগ্য আশাপূর্ণার হয়নি ঠাকুরমার কঠোর অনুশাসনে। পরবর্তীজীবনে এক স্মৃতিচারণায় এই প্রসঙ্গে আশাপূর্ণা বলেছিলেন, “...ইস্কুলে পড়লেই যে মেয়েরা... বাচাল হয়ে উঠবে, এ তথ্য আর কেউ না জানুক আমাদের ঠাকুমা ভালোভাবেই জানতেন, এবং তাঁর মাতৃভক্ত পুত্রদের পক্ষে ওই জানার বিরুদ্ধে কিছু করার শক্তি ছিল না।” তবে এই প্রতিকূল পরিবেশেও মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে দাদাদের পড়া শুনে শুনে শিখে গিয়েছিলেন পড়তে। বর্ণপরিচয় আয়ত্ত করেছিলেন বিপরীত দিক থেকে।
মা সরলাসুন্দরী ছিলেন একনিষ্ঠ সাহিত্য-পাঠিকা। সেই সাহিত্যপ্রীতি তিনি তার কন্যাদের মধ্যেও সঞ্চারিত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। সাধনা, প্রবাসী, ভারতবর্ষ, সবুজপত্র, বঙ্গদর্শন, বসুমতী, সাহিত্য, বালক, শিশুসাথী, সন্দেশ প্রভৃতি ১৬-১৭টি পত্রিকা এবং দৈনিক পত্রিকা হিতবাদী তো বাড়িতে আসতই, তাছাড়াও সরলাসুন্দরী ছিলেন স্বনামধন্য বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, জ্ঞানপ্রকাশ লাইব্রেরি ও চৈতন্য লাইব্রেরির সদস্য। বাড়িতে সেযুগের সকল প্রসিদ্ধ গ্রন্থের একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডারও ছিল। এই অণুকূল পরিবেশে মাত্র ছয় বছর বয়স থেকেই পাঠ্য ও অপাঠ্য নির্বিশেষে পুরোদমে পড়াশোনা শুরু করে দেন আশাপূর্ণা।
পরবর্তী কালে এই বাল্যকাল সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, “হিসেব মতো আমার ছেলেবেলাটা কেটেছে, সংসার ঊর্ধ্বের একটি স্বর্গীয় জগতে। বই পড়াই ছিল দৈনিক জীবনের আসল কাজ।”
১৯২৪ সালে, মাত্র ১৫ বছর ৮ মাস বয়সে কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা কালিদাস গুপ্তের সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়।
আশাপূর্ণা দেবী রচিত গ্রন্থাবলি : সুবর্ণলতা , বকুলকথা , অগ্নিপরীক্ষা , গজ উকিলের হত্যা রহস্য , ভূতুরে কুকুর , শুক্তিসাগর , সুখের চাবি ,
বলয়গ্রাস , যোগবিয়োগ , নির্জন পৃথিবী , ছাড়পত্র , প্রথম লগ্ন , সমুদ্র নীল আকাশ নীল , উত্তরলিপি , তিনছন্দ , আর এক ঝড় , নদী দিক হারা , একটি সন্ধ্যা একটি সকাল , উত্তরণ , জহুরী , মায়াজাল ।
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
জ্ঞানপীঠ পুরস্কার , রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমী ফেলোশিপ
মৃত্যু : ১৩ই জুলাই , ১৯৯৫
i) ক্ষমতা কাকে বলে ? ক্ষমতার মূল উপাদান গুলি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো ।
জাতীয় স্বার্থের সংজ্ঞা দাও । জাতীয় স্বার্থরক্ষার বিভিন্ন উপাদান গুলি উল্লেখ করো ।
ii) উদারনীতি বাদ কাকে বলে ? উদারনীতি বাদের মূল বৈশিষ্ট্য গুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
iii) ভারতের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।
ভারতের কোনো একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা ও পদমর্যাদা আলোচনা করো ।
iv) ভারতীয় পার্লামেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা করো ।
v) ভারতের সুপ্রিমকোর্টের গঠন ও কার্যাবলী আলোচনা করো ।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টিকা লেখো ।
পুরো মাইনে টা সে সহকর্মী বন্ধু নিখিল এর মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে । শহরের ফুটপাতে ঘুরে ঘুরে দুর্ভিক্ষ পীড়িতদের দেখতে দেখতে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় পরিবার, পেশা ও সমাজকে ত্যাগ করে এইসব না খেতে পাওয়া মানুষদেরই একজন হয়ে যায় । ছেড়া ন্যাকড়া পড়ে, মুখ ভর্তি দাড়ি নিয়ে মগ হাতে লঙ্গরখানায় মারামারি করে খেচুরি খায় আর ফুটপাতে পড়ে থাকে সে ।
নিজের সর্বস্ব দিয়ে ও দুর্ভিক্ষপীড়িত দের বাঁচাতে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হতাশ হয়ে সর্বহারা শ্রেণীর মধ্যে নিজেকে বিলীন করে দিয়েছে এতে নিজে যেমন প্রকৃত ভাবে বাঁচতে পারেনি , তেমনি অনাহারী দেরও বাঁচাতে পারেনি। তাই এ গল্পের শিরোনামের মধ্য দিয়ে লেখক ' ভুল সর্গ - এর অধিবাসী এ গল্পের মুখ্য চরিত্রের ঘটন মূলক সমালোচনা করে এর নামকরণের সার্থক করে তুলেছে ।
মৃত্যুঞ্জয় একদিন অফিস যাওয়ার পথে আকমক্ষিকভাবে দেখে ফেলে ফুটপাতের অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য।দুর্ভিক্ষের সময় এমন দৃশ্য খুব স্বাভাবিক হলেও আবেগপ্রবণ মৃত্যুঞ্জয় এই দৃশ্যে দেখে প্রচন্ড আঘাত পায়। তারপর থেকে সে ক্রমে ক্রমে ভিতরে-বাইরে পাল্টে দিতে শুরু করে। অপরাধবোধে সস্ত্রীক মৃত্যুঞ্জয় এক বেলা না খেয়ে সে খাবার বিলিয়ে দেই দুর্ভিক্ষপীড়িত দের মধ্যে। এমনকি মাসের পুরো মাইনেটা সে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয় । কিন্তু অচিরেই বুঝতে পারে যে যথা সর্বস্ব দান করলেও অনাহারী মানুষগুলো কিছু মাত্র ভালো করতে পারবে না সে এরপর তাই সে অন্য প্রার্থীদের ভিড়ে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় তাদেরই একজন হয়ে যায় । অফিসে এবং তারপর বাড়িতে যাওয়াও বন্ধ করে দেয় সে । ছেড়া ন্যাকড়া পরে খালি গায়ে শেষ সে অনাহারীদের সঙ্গে ফুটপাতে পড়ে থাকে এবং লঙ্গরখানার খিচুড়ি কারাকারি করে খেতে শুরু করে ।
সুতরাং , মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষদেরপ্রতিবাদে, প্রতিরোধ বা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে না পারলেও সে যে মধ্যবিত্তের খোলস ত্যাগ করে সর্বহারা শ্রেণীর মধ্যে বিলীন হতে পেরেছে এটাও কম কৃতিত্বের নয় ।
শয্যাশায়ী অবস্থায় সে বারবার নিজের স্বামীর খোঁজ খবর করেছে, স্বামীর সহকর্মী বন্ধু নিখিল কেউ সকাতর অনুরোধ করেছে তার স্বামীর খেয়াল রাখতে সঙ্গে থাকতে । দুই-তিনবার সে স্বামীর ফুটপাথে দুর্ভিক্ষ পীড়িত অনাহার মানুষগুলোকে দেখে বেড়ানোর সঙ্গী ও হয়েছে । নিখিল কে সে জানায় উঠতে পারলে আমি তো সঙ্গে ঘুরতাম ঠাকুরপো। মৃত্যুঞ্জয় এর ব্যাপারে টুনুর মা আরও জানিয়েছেন একেবারে মুষরে ছেড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন।
নিখিল কে সে বলেছে , উনি পাগল হয়ে যাচ্ছেন আমারও মনে হচ্ছে যেন পাগল হয়ে যাব। ছেলে মেয়ে গুলির জন্য সত্যিই আমার ভাবনা হয় না। কেবলই মনে পড়ে ফুটপাতের ওই লোক গুলির কথা। এভাবেই মৃত্যুঞ্জয় আদর্শবাদের সঙ্গী হয়ে যায় টুনুর মা।
সুতরাং, টুনুর মা এ গল্পের প্রধান চরিত্র হলেও গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়কে উজ্জ্বল করে তুলে ধরার এই চরিত্রটি ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে ।
উত্তর:- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের " কে বাঁচায় কে বাঁচে " ছোটগল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অফিসের সহকর্মী বন্ধু ছিল নিখিল । প্রখর বুদ্ধিমান এই রোগা যুবকটি ছিল কিছুটা অলস প্রকৃতির । দুই সন্তানের পিতা নিখিলের সংসারে বিশেষ মন নেই বলে কেউ কেউ মনে করতেন। বইপত্র পড়ে এবং নিজের ভাবনার জগতে বিচরন করেই অবসর সময় কাটা তো এই অন্তর্মূখী যুবকটি।
অফিসের সহকর্মী বন্ধু মৃতুঞ্জয়ের মাইনে নিখিলে থেকে সামান্য কিছু বেশি হলেও অন্য সকলের মতো নিখিল ও তাকে তাকে বেশ পছন্দ করত । হয়তো তাতে কিছুটা অবজ্ঞা মিশ্রিত ভালোবাসা জড়িয়ে থাকতো । তবে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শক্তির কাছে নিখিল কিছুটা যেন নিস্তেজ ছিল। মাঝে মাঝে তার এই ভেবে আফসোস হত রে সে চদি নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হত তাহলে মন্দ হত না । এর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি তার সহকর্মী নিখিলের মৃদু ঈষার পরিচয় ও পাওয়া যায়।
[ ] তবে নিখিল স্বার্থপর ছিলনা । প্রতিমাসে তিন জায়গায় তাকে অর্থ সাহায্য পাঠাতে দেখা যায়। তাছাড়া মৃত্যুঞ্জয় কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন ধরে সে সচেষ্ট থেকেছে, তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছে এবং মৃত্যুঞ্জয় অফিসে যাওয়া বন্ধ করলে তার ছুটির ব্যবস্থা ও করেছে ।
হৃদয়বান , সামাজিক যুবক নিখিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে দুঃখি হলেও প্রিয় বন্ধু মৃত্যুঞ্জয় মতো একেবারে ভেঙ্গে পড়েনি । তাছাড়া মাইনের পুরো টাকাটা মৃত্যুঞ্জয় ত্রাণ তহবিলে দান করলে সে তার প্রতিবাদ করেছি এ কথা ভেবে যে এভাবে দেশের লোক কে বাঁচানো যায় না। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের প্রতি আন্তরিক ভাবনা ও তার কথায় প্রতিফলিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের মতোই সে এই যৌক্তিক কথা ই নিজে না খাইয়া মারা বড় পাপ।
[ ] সুতরাং, চরিত্রের বিভিন্ন দিক গুলি পর্যালোচনা করে বলা যায় যে সে এ গল্পের হৃদয়বান এক বাস্তব বাদী চরিত্র।