শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১

বিভাব নাটকে বর্ণিত প্রথম লভ সিনটি নিজের ভাষায় ব্যক্ত করো ।

 

বিভাব নাটকে বর্ণিত প্রথম লভ সিনটি নিজের ভাষায় ব্যক্ত করো ।

 




প্রশ্ন :- বিভাব নাটকে বর্ণিত প্রথম লভ সিনটি নিজের ভাষায় ব্যক্ত করো ।





উত্তর :- বাংলা তথা ভারতীয় নাট্য জগতে এক প্রবাদপ্রতিম ব্যাক্তিত্ব শম্ভু মিত্র । তার নাটক গণ্য নাট্য থেকে নব্য নাট্য , অ্যান্টি ড্রামা থেকে রাবীন্দ্রিক রূপকথা  সব ক্ষেত্রেই স্বচ্ছন্দ বিচনরণ করে । কিন্তু এ সবের পরেও তার নাটকে মূলত যা প্রতিফলিত হয় , তা হল জীবন এবং একমাত্র জীবন । আলোচ্য " বিভাব" নাটকটিও সেই ভাবনারই প্রতিচ্ছবি ।

হাসির নাটকে প্রেম - বিষয়ক নির্বাচন : নাটকে নাট্যকার ও চরিত্র শম্ভু মিত্র হাসির ভাব জাগিয়ে তোলার জন্য অমরের বাড়িতে আসে । উদ্দেশ্য হাসির নাটক তৈরি করে " বক্স অফিস " কাপানো । সেই উদ্দেশ্য চলে বিশেষ ভাব সংগ্রহের নাটকীয় আলোচনা । আলোচনায় উঠে আসে " পৃথিবীতে সবচেয়ে পপুলার জিনিস হচ্ছে প্রেম "। তাতে " হিউম্যান ইন্টারেস্ট " এবং " পপুলার অ্যাপিল " দুটোই আছে । সুতরাং তড়িঘড়ি একটা সিন অ্যারেঞ্জ করা হয় । দৃশ্যের পটভূমিও নির্বাচিত হয়  বৌদির ভাবনা অনুযায়ী । আবার , বৌদির পছন্দেই নায়কের রোল প্লে করে শম্ভু । আর নায়িকা তো নিশ্চিত ভাবেই বৌদি ।

লাভ সিনে জখমী সংঘটন : নায়ক নায়িকা নির্বাচন হয়ে গেছে । বেশ এবার সমগ্র দৃশ্যের নির্দেশনায় বৌদি একটা কাল্পনিক রাস্তা ধরে হাঁটতে শুরু করে । মানে ব্যাপারটা হল নায়িকা কলেজ থেকে ফিরছে । উল্টো দিক থেকে শম্ভু মানে নায়ক কোনো অনির্দিষ্ট জায়গা থেকে উদ্দেশ্যহীন ভাবে আসতে থাকে । ব্যাস স্বাভাবিক ভাবেই নায়ক নায়িকার পূর্ব নির্দিষ্ট নিশ্চিত ধাক্কা । নায়িকা রেগে উঠে স্বাভাবিক তেমন টাই হওয়া উচিৎ আর কি । নাট্য পরিকল্পনায় সেটাই তো ডিমান্ড । ফলত প্রচন্ড বিরক্তি আর তীব্র ঝাঁঝি দিয়ে নায়িকা বলে ওঠে - " কেয়া আপ দেখতে নেহি - চোখ খুলে চলতে জানেন না ?" নায়ক বেচারা একেবারেই গোবেচারা ফলত এই আকস্মিক মেজাজ খেয়ে আমতা আমতা করতে হয়  । আর তক্ষুনি সপাটে এক চর মারে নায়িকা । নায়ক বিমর্ষ, সিন জখমী হয়ে পড়ে ।


বলিউডি ভাব বিলাসিতা প্রেম : সিন যখন জখমী নায়ক যখন আহত তক্ষুনি অদ্ভুত সংঘটন ক্রিয়ায় একেবারে বিস্ময়কর ভাবে সম্পূর্ন বিপরীত ভাবাবেগে নায়িকা হয়ে পড়ে পূর্বাগাছন্ন । একেবারে ফিল্মি ঢংয়ে ন্যাকামির ভঙ্গিতে পঞ্চাশ ষাট দশকের বলিউড ঘরনায় । কল্পিত গাছের ডাল ধরে  হারমোনিয়াম সহযোগে প্লে ব্যাকের দৌলতে নায়িকা গান গেয়ে ওঠে - " ওই মালতিলতা দোলে " ।



বিশ্বভারতীর বংশদন্ডের ভয়ে লভ সিনের যবনিকা পতন : নায়িকা গান গায় - " মালতী লতা দোলে কিন্তু সেই গানের " দোলে" " দোলে " - এমন দুলিয়ে দিয়ে যায় যে বিশ্ব ভারতীর বংশ দন্ডের ভয়ে হৃদপিন্ড পর্যন্ত দুলে ওঠে ।

এ ভাবেই বৌদির উদ্ভাবনী প্রকল্পনা সত্বেও প্রথম লভ সিনকে ক্যানসেল করতে হলো ।









কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন