Breaking News

করোনা ভাইরাস বাংলা রচনা



ভূমিকা : বিজ্ঞান প্রযুক্তির বলে মানব সভ্যতা যতই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাক না কেন , প্রকৃতির হাতে মানব সভ্যতার দার বাঁধা আছে । বারবার তাঁর প্রমান দিয়ে যায় প্রকৃতি , কোন কোন সময় বন্যা , কোন কোন সময় মহামারী , ভূমিকম্প ইত্যাদির মধ্য দিয়ে । বর্তমানে আমরা সকলেই নতুন এক বৈশ্বিক মহামারীর প্রকপের সম্মুখীন হয়েছি  , যাঁর নামকরণ করা হয়েছে ( Covid - 19 ) । বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের বার্তাবরণ ছড়িয়ে পড়েছে । যে প্রকৃতি সৃষ্টির মূলে , আবার সেই প্রকৃতিই সেজে ওঠে মারণ সাজে , যাঁর প্রকোপে পড়েছে মানব সভ্যতা । 


ভাইরাসের আবিষ্কার : করোনা ভাইরাস সর্ব প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯৬০ সালে  , তবে করোনা ভাইরাসের সন্দেহ মেলে ১৯৩০ সালে । করোনা ভাইরাস প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল মালয়েশিয়ায় । WHO ইমারুল ভাইরাসটির নাম দেয় Covid - 19 , ৭ই জানুয়ারী ২০২০ সালে । Corona শব্দটি ল্যাটিন শব্দ । Covid - 19 নামকরণটি বিন্যাস হল , CO দিয়ে Corona , VI দিয়ে Virus , D দিয়ে Disease বোঝানো হয়েছে । এবং এই ভাইরাসটি ছড়ায় ২০১৯ সালে , তাই ১৯ নাম দেওয়া হয়েছে । এখনো পর্যন্ত ৭  গোত্রের প্রজাতির ভাইরাসের নাম পাওয়া গেছে । 

1) HCOV - 229E  2) HCOV - NI63 3) HCOV - OC43 4) HCOV - HKU1 5) MERS - COV 6) SARS - COV 7) SARS - COV-2   

WHO এই পর্যন্ত তিনটি বৈশ্বিক মহামারীর ঘোষণা করেন , তাঁর মধ্যে অন্যতম হল COVID - 19 | 



ভাইরাসের শনাক্ত : ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৯ সালে , চীনের উহান শহরে ভাইরাসের প্রভাব লক্ষ্য করা যায় । WHO কোভিড ১৯ ke পেন্ডেমিক হিসেবে ঘোষণা করেন ১১ ই মার্চ ২০২০ । কোভিড ১৯ রোগটির বহনকারী ভাইরাস টি হল SARS - COV-2   । বিজ্ঞানীরা ৯ই জানুয়ারী ২০২০ সালে কোভিড ১৯ কে SARS গোত্রের ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করেন ।


ভাইরাসের নামকরণ : এই ভাইরাসটির আকৃতি মুকুট এর মতো তাই নামকরণ হয়েছে করোনা । ২০১৯ সালে ভাইরাসটির প্রবল মাত্রায় ছড়ায় তাই 19 নামকরণ করা হয়েছে । বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহামারী রূপ ধারণ করেছে এই ভাইরাস । এই ভাইরাসটির 50 - 200 ন্যানো
মিটার । এই ভাইরাসের চার ধরনের প্রোটিন পাওয়া যায় । এবং ভাইরাসটি RNA প্রকৃতির 


ভাইরাসের উৎপত্তি : ভাইরাসটি কীভাবে প্রথম কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর সঠিকভাবে ব্যাখ্যা এখনো পর্যন্ত দেওয়া যায়নি । তবে অনুমানের বিচারে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর , চীনের উহান প্রদেশের মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হতে দেখা যায় । এবং আস্তে আস্তে এর আকার মহামারী রূপ ধারণ করে । চীনের প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয় ১১ জানুয়ারী ২০২০ সালে । করোনা ভাইরাস নিয়ে সর্তককারি চিকিৎসকের নাম লি ওয়েন লিয়াং । এই চিকিৎসকের মৃত্যু ঘটে ৫ জানুয়ারী ২০২০ সালে । এই ভাইরাসের কবলে পড়েছে ২৩১ টি দেশ ।



করোনা ভাইরাসের লক্ষণ : WHO এর নির্দেশনামা অনুযায়ী এই রোগের লক্ষণ গুলি হল জ্বর , কাশী , নাক দিয়ে জল পড়া , শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি । প্রাথমিক ভাবে আক্রান্ত ব্যাক্তির প্রথমে জ্বর , গলা ব্যাথা আসতে আসতে শ্বাসকষ্টের প্রদাহ ইত্যাদি লক্ষণ গুলি ২ - ১৪ দিনের মধ্যে প্রবল আকার ধারণ করে । আক্রান্ত ব্যাক্তির হাঁচি - কাশীর মধ্য দিয়ে এ ভাইরাসটি মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়ে । যেকোনো বয়সের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে । তবে বৃদ্ধ মানুষ ও দুর্বল ব্যাক্তির মধ্যে এই রোগের পার্দুভাব প্রবল । RT PCR  এই পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ সনাক্ত করা হয় । করোনা ভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার জন্য নাক ও গলার নমুনা সংগ্রহ করার বিশেষ কাঠের নাম সোয়াব স্টিক ।



করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা পদ্ধতি : এই রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো পর্যন্ত আবিস্কার করা যায়নি , তবে স্যানিটাইজার , মাস্ক , গরম পানীয় , এবং প্রোটিন জাতীয় খাদ্য , সঙ্গে ফল ভিটামিন , C জাতীয় খাদ্য আক্রান্ত রোগীকে দেওয়া হয় । 


করোনা ভাইরাসের ভ্রান্ত ধারণা : গোমূত্র সেবন এবং করুণা মাতার পূজো দেওয়া , এর ফলে নাকি করুণার কবল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । গরম ও আর্দ্র অঞ্চলে ভাইরাস ছড়ায় না , ইত্যাদি ভ্রান্ত ধারনা গুলি মানুষের মধ্যে প্রচারিত হয়েছে ।


বিশ্বের করোনার প্রভাব :  পৃথিবীর রথচাকা যেন আজ থমকে গেছে বিশ্ববাসী আজ গৃহবন্দি । এই মরণ ভাইরাস বা অতিমারিকে রক্ষা করার জন্য দেশব্যাপী পালন করা হচ্ছে লকডাউন । ভারতে ২২ শে মার্চ ২০২০ থেকে প্রথম ধাপের লকডাউন শুরু হয় । আমেরিকা , ইতালি , চিন , বিশ্বের ধনী দেশগুলোও করোনার প্রকাপে প্রকপিত । সারা বিশ্বের মোট ১০ কোটির উপরে লোক করোনার প্রকাপের সম্মুখীন হয়েছে । ভারতের যে রাজ্য গুলি করোনা ভাইরাসের প্রকাপের প্রথম স্থানে রয়েছে তাঁর নাম হল মহারাষ্ট্র , অন্ধপ্রদেশ , কর্ণাটক , তামিনাড়ু , দিল্লি , উত্তর প্রদেশ , পশ্চিমবঙ্গ ।



উপসংহার : COVID 19 করাল গ্রাস থেকে মুক্তির পন্থা হিসেবে নিজের সচেতননা ও সক্রিয়তা ,অবলম্বনের মধ্য দিয়ে আমরা অতিমারিকেও জয় করতে সক্ষম হবো ।

 

No comments