Breaking News

“জানিলাম এ জগৎ / স্বপ্ন নয় ।” — কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো ।

 


উত্তর  >> ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থের ১১ সংখ্যক কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছেও জীবনকে নতুনভাবে বোঝার বা মূল্যায়নের চেষ্টা করেছেন । ‘জন্মদিনে’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন -


“আমি পৃথিবীর কবি , যেথা তার যত ওঠে ধ্বনি

আমার বাঁশির সুরে সাড়া তার জাগিবে তখনি।”


 

 আলোচ্য কবিতাতেও এই পৃথিবীতেই আসতে চেয়েছেন তিনি । স্বপ্নও কল্পনার মায়া-আবরণকে দূরে সরিয়ে রবীন্দ্রনাথ যে জগৎকে দেখেছেন তা আঘাত-সংঘাতমুখর , বেদনায় কাতর । প্রতিদিনের ব্যক্তিগত জীবনের হতাশা , যন্ত্রণা , সামাজিক এবং রাজনৈতিক নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদির মধ্যে দিয়েই জীবনের যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায় । এই জীবন তাই স্বপ্নের রঙে রঙিন নয় , রক্তের অক্ষরেই এর যথার্থ পরিচয় । সে জীবনে ‘দুঃখের তপস্যা’ই হয়তো সত্য , কিন্তু তার মধ্যেই ঘটবে জীবনের বিকাশ । রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় স্বপ্নের বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে ‘সত্য’ । এই ‘সত্য’ হল জীবনকে তার যথাযথ তাৎপর্যে বুঝতে শেখা । ‘মানুষের ধর্ম’- এ রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন — “তাই বিরাটকে বলি রুদ্র , তিনি মুক্তির দিকে আকর্ষণ করেন দুঃখের পথে ।” জীবন দুঃখময় , কিন্তু তার মধ্যে দিয়েই মানুষের চৈতন্যের বিকাশ ঘটে । সে জীবনের ধর্মকে অনুভব করতে পারে । তাই - স্বপ্নবিলাসিতায় নয় , দুঃখের তরঙ্গমুখরতাতেই জীবন ‘সত্য’কে খুঁজে পাওয়া যায় ।

 

No comments