Breaking News

“আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা এ জীবন ।”— কেন কবি এই জীবনকে ‘দুঃখের তপস্যা’ বলেছেন ? এখানে কবির মনোভাবে যে বিবর্তনের ছবি পাওয়া যায় তা নিজের ভাষায় লেখো ।

 


উত্তর  >> রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘রূপনারানের কূলে’ কবিতায় জীবনকে “আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যা” বলেছেন । কবির কাছে জীবন হল আঘাত-সংঘাতের মধ্য দিয়ে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে সত্যকে উপলব্ধি করা। সত্যের স্বরূপ অত্যন্ত কঠিন । সুখ এবং আনন্দকে অতিক্রম করে দুঃখের নির্মমতায় তার বিস্তার । সত্যকে পাওয়ার জন্য মানুষের যে সাধনা তা অত্যন্ত কঠিন। তাকে উপলব্ধি করার জন্য কল্পনার সৌধ থেকে নেমে আসতে হয় বাস্তবের অমসৃণ জমিতে । ‘রক্তের অক্ষরে’ নিজের রূপ দেখতে পাওয়া যায় , নিজেকে চিনতে পারা যায় আঘাতে-বেদনায় । কবি সত্যের যে কঠিন স্বরূপ , তাকে চিনে নিতে পারেন এবং সেই কঠিনকেই তিনি ভালোবাসেন । কারণ সত্য কখনো বঞ্ছনা করে না । সত্যের প্রতি এই আকর্ষণ এবং তার স্বরূপের যথার্থ উপলব্ধি থেকেই কবির মনে হয়ে জীবন হল “আমৃত্যুর দুঃখের তপস্যার” । 

>>  সত্যের যে উপলব্ধিতে কবি পৌঁছেছেন তা আসলে কবি মনের এক স্পষ্ট বিবর্তনের ইঙ্গিত । কল্পনার জগত থেকে বাস্তবের জমিতে নেমে আসা । কবিতার সূচনাতেই কবি লিখেছেন “রূপনারানের কূলে / জেগে উঠিলাম , / জানিলাম এ জগৎ স্বপ্ন নয় ।” অর্থাৎ পৃথিবীর মানুষের সান্নিধ্য কবিকে কল্পনার জগত থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে নিয়ে এসেছে , সে নির্বাসন আঘাত-সংঘাত মুখর জনসমাজে । কল্পনা থেকে সত্যের পথে কবিচেতনার বিবর্তন এভাবেই সম্ভব হয়েছে ।

No comments