Breaking News

কলকাতায় এসে লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়রা যে পাড়ায় ভাড়াবাড়িতে এসে উঠেছিলেন , সে পাড়াটির বর্ণনা দাও ‘কলের কলকাতা’ রচনা অবলম্বন করে ।

 


উত্তর :- ‘কলের কলকাতা’ রচনার লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়রা কলকাতায় এসে উঠেছিলেন নেবুতলার ভাড়াবাড়িতে । সংকীর্ণ এক গলির মধ্যে ছিল বাড়িটি । সে বাড়ির চারপাশে ছিল প্যাকিং বাক্সের মতো গাদা গাদা বাড়ি । একটা বাড়ির সঙ্গে আর-একটা বাড়ি যেন আঠা দিয়ে জোড়া । পাড়ার কানাগলির মোড়ে দোতলা-সমান উঁচুতে মালার মতো ঝুলত টেলিফোনের একগুচ্ছ তার । আর সেই কানাগলির মোড়ের বাঁ - দিকের বাড়ির সামনে রাতে টিমটিম করে জ্বলত গ্যাসের আলো । সেই আলোর ঠিক নীচে ছিল একটি মিষ্টির দোকান । ডানদিকে ছিল কর্পোরেশনের স্কুল । সেই স্কুলের সামনের বড়ো একটা রোয়াকে পাড়ার বুড়োরা আড্ডা দিত । একটু এগিয়ে ছিল একটি দর্জির দোকান , যে দর্জির একটা পা ছিল কাটা । পাড়ার ছেলেছোকরারা সে দোকানে আড্ডা দিত । পাড়াটিতে বিভিন্ন পেশার মানুষ বাস করতেন । কেউ ডাক্তার , কেউ কবিরাজ , কেউ লোহালক্কড়ের দোকানদার , কেউ সোনারুপোর দোকানি , কেউ সওদাগরি অফিসের চাকুরে , কেউ ছিল পেশাগতভাবে বাড়িওয়ালা । লেখকদের বাড়িওয়ালা কর্পোরেশনে চাকুরি করতেন । ডাক্তারবাবুর ভাই ছিলেন রেলের ক্যানভাসার । কবিরাজ মশাইয়ের ছোটো ছেলে ছিল বিলেতফেরত । পাড়ার আড্ডি পরিবারের এক ছেলে টাকা জাল করে জেল খাটছিল ।  

>> ভোরবেলায় রোদ্দুর পাড়ার গলির মধ্যে তেমন প্রবেশ না করলেও কলের জলের এবং বাসন মাজার শব্দে এবং কাকের পরিত্রাহি চিৎকারে ঘুম ভেঙে যেত পাড়ার লোকেদের । আর বিকেল হলেই পাড়ার ছেলেরা ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে যেত । মাঝে মাঝেই তাই বিকট চিৎকার শোনা যেত — ‘ভোঁ-কাটা’। এ পাড়াতেই বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছিলেন লেখকরা ।

 

No comments