Breaking News

“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” কবিতায় কবি জননীকে কেন ক্রন্দনরতা বলেছেন তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো । কবি এখানে নিজেকে কোন ভূমিকায় দেখতে চেয়েছেন ?

 


উত্তর : মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় স্বাধীনতা-পরবর্তী এক অস্থির সময়ের ছবি এঁকেছেন । শিল্পের জন্য কৃষিজমি কেড়ে নেওয়া , উর্বরা জমিকে এক ফসলি অনাবাদী জমি হিসেবে চিহ্নিত করা - এসব ঘটনা কবিকে অনবরত ক্রুদ্ধ এবং ব্যথিত করে তুলেছে ( ভূমিকা / ধানখেত থেকে ) । আর এইসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে রক্তাক্ত ও লাঞ্ছিত হতে হয় সাধারণ মানুষকে । নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ জঙ্গলে দেখে তাঁর মনে হয় ঈশ্বরীয় বিধানের প্রত্যাশার থেকে অনেক বেশি প্রয়োজন সম্মিলিত প্রতিবাদের । আর এভাবেই কবিতায় নিজের বিবেককে বারুদের মতো জাগিয়ে রাখেন তিনি , বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রত্যাশা নিয়ে । অর্থাৎ , লক্ষ করলে দেখা যাবে মূলত এ কবিতা প্রতিবাদের কবিতা , কিন্তু , পটভূমিতে থেকে যায় স্বদেশ । সে স্বদেশ মৃত্যু আর রক্ত-লাঞ্ছিত , নিপীড়নের কান্নায় ভেজা । মাটি আর মানুষ দিয়েই গড়া হয় দেশজননীর শরীর । সেখানে যখন রক্ত আর কান্না মেশে তখন জননী তো ক্রন্দনরতা হবেনই । এই ক্রন্দনরতা জননীকেই কবি এঁকেছেন তাঁর এই কবিতায় ৷

 

>> দায়বদ্ধ কবি লাঞ্ছিত স্বদেশকে ব্যবহার করেন তাঁর কবিতার পটভূমি হিসেবে । অত্যাচারিত মানুষের সঙ্গে তিনি সহমর্মিতা অনুভব করেন আর সে কারণে নিহত শহীদেরা হয় তাঁর ‘ভাই’, তাদের মৃত্যু কবির মনে ক্রোধের সঞ্চার করে । এই ক্রোধই মূল্যবোধ হয়ে যায় কবির কাছে নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর দেখে । বিধির বিধানে ভরসা না রেখে কবিতাকে করতে চান তার জাগ্রত বিবেকের প্রতীক । তাঁর বিবেককে বারুদের মতো জাগিয়ে রাখতে চান তিনি , বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রত্যাশা নিয়ে । 

No comments