শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজের শিল্পপ্রতিভার অনন্যতার পরিচয় দাও ।
উত্তর >> প্রখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী রামকিঙ্কর বেইজ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মে বাঁকুড়ার যুগীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতা ছিলেন চণ্ডিচরণ বেইজ । দারিদ্র্যের মধ্যে শৈশব অতিবাহিত হলেও শিল্পের প্রতি ছিল রামকিঙ্করের গভীর অনুরাগ । দেবদেবীর ছবি আঁকায় , ছুতোর-কামারদের কাজে , পুতুল গড়ায় , পোস্টার লিখনে , থিয়েটারের মঞ্চসজ্জায় তাঁর সহজাত ক্ষমতা ছিল । ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন । সেখানে নন্দলাল বসুর সান্নিধ্য লাভ করেন । রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনে তাঁর সতীর্থদের মধ্যে ছিলেন রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী , বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ । পরে শান্তিনিকেতনের শিক্ষক হন , ভাস্কর্য বিভাগের প্রধানের পদ থেকে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন । তাঁর আঁকা অজস্র ছবি ও ভাস্কর্যের মধ্যে বিখ্যাত ‘উৎসবী চোখ’, ‘শিলং সিরিজ’, ‘শরৎকাল’, ‘কৃষ্ণের জন্ম’, ‘নতুন শস্য’, ‘বিনোদিনী’, ‘মহিলা ও কুকুর’, ‘গ্রীষ্মের দুপুর’, ‘সুজাতা’, ‘বুদ্ধদেব’, ‘গান্ধীজী’, ‘হাটের সাঁওতাল পরিবার’, ‘কাজের শেষে সাঁওতাল রমণী’, ‘কালের পথে’, রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, আলাউদ্দিন খাঁ প্রমুখের মূর্তি প্রভৃতি । ভারতের নানা স্থানে তাঁর ছবি ও মূর্তির প্রদর্শনী হয়েছে । দেশের প্রধান সংগ্রহশালাগুলিতে তাঁর শিল্পকর্ম মর্যাদার সঙ্গে স্থান পেয়েছে । ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে রামকিঙ্কর ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি পান । ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীর ‘এমেরিটাস প্রফেসর’ হন । ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতী তাঁকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করেন । রামকিঙ্কর বেইজ ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ২ আগস্ট লোকান্তরিত হন ।

No comments